ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ, এক ট্রলারের মাছ বিক্রি ৩৩ থেকে ৪০ লাখ টাকা।

- আপডেট সময় : ০৪:০১:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫ ৯৬ বার পড়া হয়েছে
ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালী ইলিশ, এক ট্রলারের মাছ বিক্রি ৩৩ থেকে ৪০ লাখ টাকা।
দীর্ঘ চার মাস পর এই ঘাটজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশের দেখা মিলেছে। ঘাটের পাশেই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চলছে জেলেদের ব্যস্ততা। কেউ মাছ নামাচ্ছেন, কেউ বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। এক ট্রলার থেকেই ৩৩ থেকে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কিছুক্ষণ আগেই গভীর সাগর থেকে ঘাটে ভিড়েছে পাঁচটি ট্রলার। প্রতিটিতেই ধরা পড়েছে বড় ইলিশ। সঙ্গে রয়েছে নানা রকম সামুদ্রিক মাছ।
আজ রোববার সকালে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা ফিশারিঘাটে গিয়ে দেখা যায় এই চিত্রের। ঘাটজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ। জেলে ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ চার মাস সাগরে ইলিশ ধরা পড়েনি। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে ট্রলারে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়ছে। সামনেও আরও বাড়বে বলে তাঁদের আশা। তবে বঙ্গোপসাগর এখনো কিছুটা উত্তাল রয়েছে। সাগরে নিম্নচাপ অথবা লঘুচাপ সৃষ্টি না হলে আগামী কয়েক মাস বেশি মাত্রায় সাগরে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়বে। টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়াসহ জেলায় মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে পাঁচ হাজার। এসব ট্রলারে কাজ করেন ১ লাখ ১২ হাজার শ্রমিক। ইলিশের দাম অনেক বেশি। স্থানীয় বাজারে এই দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়। কিছুদিন পর দাম কমলে এসব বাজারে ইলিশ পাওয়া যাবে।’
কক্সবাজার সদর উপজেলার একটি ট্রলারের জালে ধরা পড়েছে ৩ হাজার ২২২টি ইলিশ। এর মধ্যে ৩ হাজার ইলিশ ৩৮ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন জেলেরা। বাকি ইলিশ জেলে ও ট্রলার মালিক ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। কক্সবাজার উপকূল থেকে ইলিশ ধরে শহরের ফিসারীঘাটে ভিড়েছে ট্রলার। অবশ্য শুধু এই ট্রলার নয়। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার একটি ট্রলারে ধরা পড়েছে ১ হাজার ২০০ ইলিশ। তিনি এসব ইলিশ বিক্রি করে পেয়েছেন ১৯ লাখ টাকা। পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ট্রলারে ছিল ১ হাজার ১০০টি ইলিশ। তিনি এসব বিক্রি করে পেয়েছেন ১২ লাখ টাকা। মাঝিরা বলেন, গভীর সাগরে ইলিশের দেখা মিলছে; কিন্তু ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা ট্রলার চালিয়ে গভীর সাগরে যাওয়ার সক্ষমতা অধিকাংশ ট্রলারের নেই। কক্সবাজারের ৩ হাজারের মতো ট্রলার রয়েছে, যেটি দিয়ে উপকূল থেকে দূরে গিয়ে মাছ ধরতে পারে।
৮০০ গ্রাম থেকে ১২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকায়। আর ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১ হাজার ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ছোট ইলিশ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায়। ইলিশের দাম বেশি। কিছুদিন পর দাম কমলে স্থানীয় বাজারে ইলিশ পাওয়া যাবে।
চলতি বছর ১২ জুন সাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছিল। তখন সাগরে নামার জন্য পাঁচ হাজার ট্রলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে গভীর নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় গভীর সাগরের ইলিশ সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ও টেকনাফ উপকূলের দিকে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, গত বছর জেলায় মাছ উৎপাদিত হয়েছিল ২ লাখ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে ইলিশ ছিল ৩৫ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। চলতি বছর এ জেলায় ৩৬ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।