রুশ ঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা: ৪০+ বোমারু বিমান ধ্বংসের দাবি

- আপডেট সময় : ০৮:৫২:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫ ৫০ বার পড়া হয়েছে
রাশিয়ার চার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা: ৪০টির বেশি বোমারু বিমান ধ্বংসের দাবি
কিয়েভ, ২রা জুন, ২০২৫: ইউক্রেন দাবি করেছে যে তারা রাশিয়ার চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটিতে বড় আকারের ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার ফলে ৪০টিরও বেশি রুশ বোমারু বিমান ধ্বংস হয়েছে। ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা (SBU) এই ‘অপারেশন স্পাইডারস ওয়েব’-এর দায় স্বীকার করেছে এবং এটিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাশিয়ার অভ্যন্তরে সবচেয়ে বড় এবং ধ্বংসাত্মক হামলা বলে উল্লেখ করেছে।
শনিবার (১লা জুন) রাতে চালানো এই হামলায় রাশিয়ার মুরমানস্ক, ইরকুটস্ক (সাইবেরিয়াতে অবস্থিত, ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ৪,৩০০ কিলোমিটার দূরে), ইভানোভো এবং রিয়াজান অঞ্চলের বিমানঘাঁটিগুলো লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ইউক্রেনের এসবিইউ সূত্র জানিয়েছে, এই হামলায় Tu-95 এবং Tu-22M3 মডেলের কৌশলগত বোমারু বিমান এবং একটি A-50 প্রাথমিক সতর্কীকরণ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। এই বিমানগুলো ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর জন্য ব্যবহার করত রাশিয়া।
এসবিইউ-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, ড্রোনগুলো সরাসরি ইউক্রেন থেকে নয়, বরং রাশিয়ার অভ্যন্তরে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে সেগুলোকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে উড়ানো হয়। প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, কিছু স্থানে বিস্ফোরণের দৃশ্য এবং বিমানঘাঁটি থেকে ধোঁয়া উঠছে। ইউক্রেনের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, এই হামলায় রাশিয়ার প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হামলার বিষয়টি স্বীকার করলেও, ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তারা বলেছে যে, মুরমানস্ক এবং ইরকুটস্কের বিমানঘাঁটিতে “কয়েকটি বিমান আগুনে পুড়েছে”, তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং কিছু “সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত” ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। মস্কো দাবি করেছে যে, ইভানোভো, রিয়াজান এবং আমুর (এসবিইউ দ্বারা উল্লিখিত নয়) অঞ্চলের বিমানঘাঁটিগুলোতে হামলা প্রতিহত করা হয়েছে।
এই হামলাকে ইউক্রেনের দীর্ঘ-পাল্লার হামলা চালানোর সক্ষমতার একটি বড় ধরনের উন্নতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ব্যক্তিগতভাবে এই অভিযানের তদারকি করেছেন বলে এসবিইউ সূত্র জানিয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে এই অভিযানের পরিকল্পনা চলছিল বলেও জানা গেছে।
যুদ্ধ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা রাশিয়ার কৌশলগত বিমান সক্ষমতার জন্য একটি বড় ধাক্কা, বিশেষ করে পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম Tu-95 এবং Tu-22M3 বোমারু বিমানের ক্ষতির দাবি যদি সত্য হয়। তবে, ইউক্রেনের এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি এবং রাশিয়াও এর পাল্টা কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়নি।
পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক মহল এই ঘটনার উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।