শিরোনাম:
মুরাদনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজ ছাত্রীর অবস্থান, ভয়ে পালিয়েছে প্রেমিক!

মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
- আপডেট সময় : ০৫:৫৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০৬ বার পড়া হয়েছে
মুরাদনগরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজ ছাত্রীর অবস্থান, ভয়ে পালিয়েছে প্রেমিক!
মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর ফয়সাল আহমেদ ফাহিম নামের এক লম্পট লাপাত্তা হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী ফাহিমের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন। তবে ফাহিমের স্বজনরা তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, থানা পুলিশের যোগসাজসে মেয়েটি ও তার পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করছে বলেও জানা গেছে।
সূত্রে জানাযায়, উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের সাতমোড়া গ্রামের পাখি আক্তারের মেয়ে অন্তরা আক্তার কম্পিউটার শিখতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩ মাস মেয়াদী বল্লভদী গ্রামে স্থাপিত এডুফাস্ট কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন। ওই ট্রেনিং স্টোরের প্রশিক্ষক ও এলাকার পল্লী চিকিৎসক ফারুক সরকারের ছেলে ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির সঙ্গে তিনি বিভিন্ন স্থানে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে বলে ভুক্তভোগীর দাবি। মেয়েটি বিয়ের দাবি করলে প্রেমিক ফাহিম কালক্ষেপন করতে থাকে। এই নিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারে একাধিকবার শালিস বসলে মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য ফাহিমকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সালিশের সিন্ধান্ত অমান্য করে ফাহিম এলাকা থেকে আত্মগোপনে চলে যায়। অবশেষে প্রেমিক ফাহিমের খোঁজ না পেয়ে ওই কলেজছাত্রী গত শনিবার থেকে ছয় দিন ধরে ফাহিমের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন। কিন্তু ফাহিমের পরিবারের সদস্যরা ভিকটিম মেয়েটিকে মেনে নিতে রাজি নন। অভিযোগ রয়েছে, ফাহিমের স্বজনরা বুধবার মেয়েটিকে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছেন। ভুক্তভোগী অন্তরা আক্তার ও তার পরিবার অভিযোগ করেছেন, ফাহিমের স্বজনরা থানা পুলিশের যোগসাজসে একটি মব তৈরি করে মেয়েটি ও তার পরিবারকে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। তারা মেয়েটিকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানোর ষড়যন্ত্রও চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জাহাপুর ইউপির সাবেক সদস্য আলী নেওয়াজ বলেন, মেয়েটি ধর্নাঢ্য পরিবারের এবং সুন্দরীও বটে। অনেক ভাল বিয়ে আসছে, কিন্তু মেয়েটি অন্যত্র বিয়ে করতে রাজি নয়। মেয়েটি কি কারনে বখাটে এ ছেলের জন্য পাগল তা বুঝতে পারছিনা। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী সৈকত আহমেদ বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি দুইজন মেম্বারকে ওই বাড়িতে পাঠাই। সুরাহার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ঘটনাটি ইউএনও সাহেবকে জানিয়েছি। তবে ছেলের স্বজনরা মেয়েটিকে মারধরের বিষয়টি দুঃখজনক। শুনেছি মব সুষ্টি করে মেয়েটি ও তার পরিবারকে ফাঁসানের চেষ্টা চলছে।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান এই বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেনি।অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান বলেন, বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সামাজিক ভাবে নিস্পত্তি করার জন্য ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।