সাম্প্রতিক ব্যর্থতা কাটিয়ে এক বছরের মধ্যে ওয়ানডে দলকে সুন্দর একটা জায়গায় দাঁড় করাতে চান মেহেদী হাসান মিরাজ।

- আপডেট সময় : ০৩:২১:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে
নিজেদের একসময়ের সফলতম সংস্করণ ওয়ানডে ক্রিকেটে গত কয়েক বছর ধরে অমানিশার আঁধারে বাংলাদেশ। একের পর এক হতাশাজনক পারফরম্যান্সে বড় ধাক্কা লেগেছে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়েও। এই কঠিন সময়ে নেতৃত্ব নিয়ে সাম্প্রতিক ব্যর্থতা কাটিয়ে এক বছরের মধ্যে ওয়ানডে দলকে ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার বিশ্বাস আছে নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের। তাই দলকে ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার প্রত্তয়ের কথা বেলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ওয়ানডেতে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর বাজে সিরিজ ও টুর্নামেন্ট কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৩ বিশ্বকাপে মাত্র দুই ম্যাচ জিতেছে তারা। চলতি বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয় নেই একটিও।
দ্বিপাক্ষিক লড়াইয়েও মেলে শুধুই হতাশা। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪৩ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র ১৪টি। সবশেষ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে ১৩ ম্যাচে তারা জিততে পারে স্রেফ চারটিতে।
একের পর এক নেতিবাচক পারফরম্যান্সে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের বার্ষিক হালনাগাদে ১০ নম্বরে নেমে গেছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালের পর আর কখনও ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে এত নিচে নামেনি তারা।
দলের নাজুক অবস্থায় এক বছরের জন্য দায়িত্ব পেলেন মিরাজ। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার তার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাওয়া হলো, অধিনায়কত্বের মেয়াদ ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত পেলে ভালো হতো কিনা?
ক্রিকেট বোর্ডের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার বললেন, বাজে সময় কাটিয়ে উঠতে এক বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সব কিছু করার বিশ্বাস আছে তার।
জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে শুরু হবে মিরাজের এক বছরের যাত্রা। সব ঠিক থাকলে এই মেয়াদে তার নেতৃত্বে ২১টি ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। এরপর মেয়াদ বাড়লে হয়তো ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে পারেন ২৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। তবে আপাতত এক বছরে চোখ রাখছেন মিরাজ।
লম্বা সময় দায়িত্বে পেলে ভিশন ভালো থাকে। সামনে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আছে। যেহেতু দল হিসেবে আমরা এখন একটু সংগ্রাম করছি, তাই বোর্ড হয়তো ভেবেছে এক বছরে একটা জায়গায় দাঁড় করাই দলকে। এরপর হয়তো পরবর্তী ধাপ দেখবে কন্টিনিউ করবে কী করবে না।
এখন সময় এসেছে ওয়ানডে দলকে একটা জায়গায় দাঁড় করানোর। আমাদের দুজন সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ অবসর নিয়েছেন। যারা সুযোগ পাবে আমার মনে হয় তাদেরকে এক বছরের মধ্যে সেট করা যাবে।
গত বছর শান্তর চোটে প্রথমে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে, পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিরাজ। তখন ওয়ানডেতে জয়ের মুখ দেখেননি মিরাজ।। তবে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে স্মরণীয় সাফল্য পান তিনি। তবে ব্যর্থতাময় ওই চার ওয়ানডে থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশকে সুন্দর জায়গায় দাঁড় করানোর আশা মিরাজের।
অবশ্যই ওই চার ম্যাচে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। লম্বা সময়ের জন্য দায়িত্ব পেলে একটু ভালো হয়। কারণ দলকে বুস্ট আপ করা যায় কীভাবে করলে ভালো হবে। এখন যেহেতু এক বছরের জন্য পেয়েছি, চেষ্টা করব দলকে সুন্দর একটা জায়গায় দাঁড় করাতে।
ওয়ানডে নেতৃত্ব পাওয়ার পর কালই নাজমুলের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে মিরাজ আরও বলেছেন, ‘ওর সঙ্গে আমার এই কথাই হয়েছে। নাজমুল আমাকে একটা কথাই বলেছে, অধিনায়কত্বে আমি কখনো আলাদা কিছু অনুভব করিনি। আশা করি, আমার ভেতরেও এই জিনিসটা আসবে না। আমরা একসঙ্গে কাজ করব বাংলাদেশের হয়ে। একটা ভালো জায়গায় বাংলাদেশকে দাঁড় করাতে চাই।
সাকিবের সঙ্গে আলাপের প্রসঙ্গে মিরাজ বলেছেন, ‘আমরা একসঙ্গে পিএসএল খেলেছি। তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। উনি মন থেকে চান বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে যাক। যারা এখন নতুন, উঠতি খেলোয়াড়, তারা যেন ভালো ক্রিকেট খেলে। বলেছে যে অবশ্যই দল হিসেবে একসঙ্গে খেলতে হবে। কারণ, বাংলাদেশ দল যখন একসঙ্গে পারফর্ম করে সবাই, তখন ফল পাওয়া শুরু হয়।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটটেই নেতৃত্বগুণে নজর কাড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। খুব দ্রুত বিপিএলেও অধিনায়কত্ব পান তরুণ স্পিনিং অলরাউন্ডার। তবে জাতীয় দলের দায়িত্ব পেতে অপেক্ষা করতে হলো লম্বা সময়। পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে ওয়ানডের নেতৃত্ব পাওয়া তাই মিরাজের কাছে স্বপ্ন পূরণের মতোই ব্যাপার।
অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কাজে আসবে বিভিন্ন সময়ে মাশরাফি–সাকিব আল হাসান–তামিম ইকবালের অধীন খেলার অভিজ্ঞতা, ‘বাংলাদেশ দলে আমার অভিষেক হয়েছিল মাশরাফি ভাইয়ের অধীন। আমি খেলোয়াড় হিসেবে অনেক অধিনায়ককে পেয়েছি। এটা আমার জন্য ভালো লাগার বিষয় যে তাঁদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। যেটা আমি হয়তো আমার এই অধিনায়কত্বের সময়ে কাজে লাগিয়ে স্বপ্ন পূরণের কাজটি করতে চাই।